নতুন ভোটার হতে চাচ্ছেন? অনলাইনে নতুন ভোটার রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম অনুসরণ করলে ঘরে বসে ভোটার নিবন্ধন করতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে পারবেন এই পোস্টে।
আপনার বয়স যদি ১৬ বছরের বেশি হয়, তাহলে ভোটার নিবন্ধন করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ভোটার হলেও ১৮ বছর বয়স না হওয়া অব্দি ভোট দিতে পারবেন না। তবে, ভোটার আইডি কার্ড করে রাখলে অনেক কাজে ব্যবহার করা যায়।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার নিয়ম , ভোটার আবেদন করতে কী কী লাগে এবং নতুন ভোটার হওয়ার অঙ্গিকারনামা সহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
আলোচিত বিষয়বস্তু
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে
নতুন ভোটার হতে চাইলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়। ভোটার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে যা যা লাগে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে —
- এনআইডি কার্ডের নাম্বার বা ভোটার স্লিপ নাম্বার
- ভোটার নিবন্ধনের সময় দেয়া জন্ম তারিখ
- ভোটার নিবন্ধন করার সময় ব্যবহার করা মোবাইল নাম্বার
- বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা
- দুইটি ডিভাইস (একটি কম্পিউটার ও একটি মোবাইল অথবা দুইটি মোবাইল)
- ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এই বিষয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে একটি বিস্তারিত আর্টিকেল প্রকাশিত আছে। সেটি পড়লে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এরপর, আবেদন করুন বাটনে ক্লিক করুন। অতঃপর, ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার সহ সকল তথ্য দিয়ে আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হবে। আবেদন সম্পন্ন হলে আবেদনের একটি কপি প্রিন্ট করে নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে জমা দিতে হবে।
আবেদনের কপি জমা দেয়ার কিছুদিনের মাঝে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ডাকা হবে। নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।
এরপর, এক মাস থেকে তিন মাস সময়ের মাঝে এসএমএস এর মাধ্যমে এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানিয়ে দেয়া হবে। এসএমএস না পেলে ভোটার স্লিপে থাকা ফরম নাম্বার দিয়ে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
নতুন ভোটার নিবন্ধন আবেদন করার বিস্তারিত পদ্ধতি নিচে ছবিসহ উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। চলুন, আরও বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
১/ ভোটার অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন
ভোটার অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করার জন্য ভিজিট করুন services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট। এরপর, নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন সেকশনে থাকা আবেদন করুন বাটনে ক্লিক করুন।
অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করার জন্য একটি ফরম আসবে। প্রথম ঘরে আপনার পুরো নাম ইংরেজিতে লিখবেন। এরপর, দিন-মাস-বছর ফরম্যাটে জন্ম তারিখ লিখবেন এবং ছবিতে থাকা ক্যাপচা কোড পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করবেন।
একটি সচল মোবাইল নাম্বার চাওয়া হবে। নাম্বার লিখে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করুন। একটি ওটিপি কোড আসবে, কোডটি লিখে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
অ্যাকাউন্ট সিকিউর রাখার জন্য একটি ইউনিক ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিতে বলবে। প্রথম ঘরে ইউজারনেম লিখবেন, দ্বিতীয় ঘরে পাসওয়ার্ড লিখবেন এবং তৃতীয় ঘরে আবারও একই পাসওয়ার্ড লিখে বহাল বাটনে ক্লিক করবেন। তাহলে আপনার ভোটার প্রোফাইলে নিয়ে যাবে।
২/ ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ
ভোটার অ্যাকাউন্টে লগইন হয়ে গেলে বিস্তারিত প্রোফাইল বাটনে ক্লিক করুন। এরপর, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা এবং অন্যান্য তথ্য দিয়ে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে।
নিচের ছবির মতো একটি ফরম পাবেন। এখানে, নাম বাংলায় এবং ইংরেজিতে লিখতে হবে, লিঙ্গ সিলেক্ট করতে হবে, রক্তের গ্রুপ সিলেক্ট করতে হবে এবং জন্ম তারিখ ও জন্ম নিবন্ধন নম্বর সিলেক্ট করতে হবে। এভাবে ব্যক্তিগত সকল তথ্য পূরণ করতে হবে।
অন্যান্য তথ্য ট্যাবে ক্লিক করে শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, ধর্ম, টেলিফোন নাম্বার, টিন নাম্বার (যদি থাকে), পাসপোর্ট নাম্বার সহ সব তথ্য পূরণ করতে হবে।
ঠিকানা সেকশনে ক্লিক করে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করতে হবে।
৩/ ভোটার নিবন্ধন ফরম ২ ডাউনলোড
ভোটার নিবন্ধন ফরমটিতে থাকা সকল ঘর পূরণ করা হলে আবেদন সাবমিট করতে হবে। আবেদন সাবমিট করার পর আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। অতঃপর, ফরমটি প্রিন্ট করে নিতে হবে।
ভোটার নিবন্ধন ফরম ২ ডাউনলোড করে প্রিন্ট করার পর সেটি নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে। অতঃপর, আবেদনের ফরমটি জমা দিতে হবে। সাথে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্র যেমন – শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট, হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ, নাগরিক সনদপত্র এবং ইউটিলিটি বিলের কপি। তাহলে আবেদন সম্পন্ন হবে।
৪/ বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান
ভোটার নিবন্ধন আবেদন ফরম জমা দেয়ার কিছুদিন পর নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে যোগাযোগ করা হবে। আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বারে কল করে বা এসএমএস করে নির্বাচন কমিশন অফিস যেতে বলা হতে পারে।
নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়ে আসবেন। হাতের সবগুলো আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশ এবং স্বাক্ষর সহ বেশ কিছু বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দিতে হবে।
এই পদ্ধতি অনুসরণ করার পর এক মাস থেকে তিন মাস সময়ের মাঝে আপনার এসএমএস করে এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানিয়ে দেয়া হবে। এসএমএস না পেলে, নির্বাচন কমিশন অফিসে ভোটার নিবন্ধন ফরম জমা দেয়ার সময় যে স্লিপ নাম্বারটি দেয়া হয়েছে, সেটি দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক করে দেখতে পারেন আইডি কার্ড তৈরি হয়েছে কিনা করতে পারবেন।
নতুন ভোটার হওয়ার অঙ্গিকারনামা
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য একটি অঙ্গিকারনামা পূরণ করে জমা দিতে হয়। নতুন ভোটার হওয়ার অঙ্গিকানামা pdf ফাইলটি নিচে সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে। ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিয়ে ভোটার নিবন্ধন করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম ডাউনলোড
নতুন ভোটার নিবন্ধন করার সময় ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য এবং ঠিকানা সহ একটি ফর্ম পূরণ করতে হয়। অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন আবেদন করার সময় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পূরণ করা যায়। কিন্তু, যারা সরাসরি ভোটার আবেদন করতে চাচ্ছেন, তারা নিচের ফরমটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে পারেন।
এই ফর্মটি ডাউনলোড করার পর সকল তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। এরপর, ফরমটি সহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে। তাদের কাছে আবেদনটি জমা দিতে হবে।
অতঃপর, বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করার মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। এই দুইটি পদ্ধতির যেকোনো একটি অনুসরণ করে একজন নতুন ভোটার হওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন।
উপসংহার
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার নিয়ম এবং ভোটার রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য নিয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ঘুরে দেখতে পারেন।