ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে চাচ্ছেন? এনআইডি নাম্বার দিয়ে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি এবং টোকেন নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি জানতে পারবেন এই পোস্টে।
ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার বা টোকেন নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করা যায়। আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করার পর সেটি প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
NID Card Download করার বিস্তারিত পদ্ধতি এখানে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আলোচিত বিষয়বস্তু
জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে কি কি লাগে
অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে যেসব তথ্য লাগবে তা নিম্নরূপ –
- এনআইডি কার্ডের নাম্বার বা ভোটার স্লিপ নাম্বার
- ভোটার নিবন্ধনের সময় দেয়া জন্ম তারিখ
- ভোটার নিবন্ধন করার সময় ব্যবহার করা মোবাইল নাম্বার
- বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা
- দুইটি ডিভাইস (একটি কম্পিউটার ও একটি মোবাইল অথবা দুইটি মোবাইল)
- ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে
এই তথ্যগুলো ব্যবহার করে অনলাইনে NID Card Download করতে পারবেন। ডাউনলোড করার বিস্তারিত পদ্ধতি নিচে জানতে পারবেন।
যারা এসএমএস এর মাধ্যমে এনআইডি কার্ডের নাম্বার পেয়েছেন, তারা সেটি ব্যবহার করে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। যারা এসএমএস পাননি, তারা ভোটার স্লিপে থাকা নাম্বার ব্যবহার করতে পারবেন।
ভোটার নিবন্ধন শেষে ফরমের এমন একটি অংশ দেয়া হয়। এই অংশে ফরম নম্বরঃ লেখার পাশে একটি নাম্বার দেখতে পারবেন। এটিই হচ্ছে ভোটার স্লিপ নাম্বার বা ফরম নাম্বার।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করে রেজিস্টার করুন বাটনে ক্লিক করুন। জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার/ফরম নাম্বার এবং জন্ম তারিখ লিখুন। ক্যাপচা কোড পূরণ করে সাবমিট করুন। বহাল বাটনে ক্লিক করে ঠিকানা সিলেক্ট করুন, মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করুন এবং ফেস ভেরিফিকেশন করুন।
এরপর, এনআইডি একাউন্টে পাসওয়ার্ড সেট করে প্রবেশ করুন। তাহলে, এনআইডি একাউন্ট থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করতে পারবেন অনেক সহজেই। বিস্তারিত নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
- NIDW ওয়েবসাইট ভিজিট করুন বা এখানে ক্লিক করুন
- রেজিস্টার করুন একটি বাটন পাবেন, সেখানে ক্লিক করুন
- জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার অথবা ফরম নাম্বার টাইপ করুন (ফরম নাম্বার লিখলে সামনে NIDFN লিখতে হবে। যেমন- NIDFN123456789)
- জন্ম তারিখ লিখুন (dd-mm-yyyy ফরম্যাটে। অর্থাৎ, দিন-মাস-বছর)
- ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন, পপআপ আসলে বহাল বাটনে ক্লিক করবেন
- আপনার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন
- নিবন্ধনের সময় ব্যবহার করা মোবাইল নাম্বারে ওটিপি সেন্ড করে ভেরিফাই করুন
- একটি QR কোড পাবেন, অন্য একটি মোবাইল দিয়ে NID Wallet অ্যাপ ইনস্টল করে সেটি ওপেন করে কোডটি স্ক্যান করুন
- এরপর, ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন। তাহলে আগের ডিভাইসে এনআইডি একাউন্টের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড সেট করতে বলবে।
- ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড সেট করার পর এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন
- প্রোফাইল অপশনে ডাউনলোড অপশন পাবেন, ক্লিক করে এনআইডি কার্ডের পিডিএফ ডাউনলোড হবে
এই পদ্ধতি অনুসরণ করে এনআইডি নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এছাড়া, টোকেন নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এই পদ্ধতিটি নিচে ছবিসহ উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান, তাহলে নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশিত বিস্তারিত আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। এছাড়া, ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার মাধ্যমে ভোটার হতে পারবেন।
NID Card Download
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অনলাইন পোর্টাল থেকে আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। এরপর, সেটি লেমিনেটিং করে ব্যবহার করতে পারবেন। বিস্তারিত পদ্ধতি ছবিসহ নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে।
ধাপ ১: NID Wing ওয়েবসাইট ভিজিট
NIDW এর পোর্টাল ভিজিট করুন বা services.nidw.gov.bd এই লিংকে ক্লিক করুন। এরপর, রেজিস্টার করুন নামের একটি বাটন দেখতে পারবেন। সেখানে ক্লিক করুন।
ধাপ ২: NID/Form No এবং জন্ম তারিখ লিখুন
একটি ফরম দেখতে পারবেন। প্রথম ঘরে আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার অথবা ফরম নাম্বার লিখুন। এসএমএস এর মাধ্যমে এনআইডি কার্ডের নাম্বার পেলে সেটি লিখতে হবে।
যারা এসএমএস পাননি, তারা NIDFN লেখার পর ফাঁকা না রেখেই ফরম নাম্বারটি লিখুন। ফরম নাম্বার এভাবে লিখবেন — NIDFN123456789
এরপর, জন্ম তারিখ (দিন-মাস-বছর) লিখুন এবং নিচের ছবিতে দেখানো কোডটি ফাঁকা ঘরে লিখে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৩: বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন
ভোটার নিবন্ধন করার সময় যে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছিলেন, এই ধাপে সেগুলো নির্বাচন করতে হবে। এরপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
ঠিকানা নির্বাচন করা সময় ভুল ঠিকানা দেয়া যাবেনা। তিনবার ভুল ঠিকানা নির্বাচন করলে আপনার এনআইডি একাউন্টটি ব্লক হয়ে যাবে। তখন নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে ঠিক করতে হবে।
ধাপ ৪: মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করুন
ভোটার নিবন্ধন করার সময় যে মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করেছিলেন, সেটিতে একটি কোড সেন্ড করতে বলবে। নাম্বারটি আপনার কাছে থাকলে বার্তা পাঠান বাটনে ক্লিক করুন এবং ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
নাম্বারটি আপনার কাছে না থাকলে নাম্বার পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
ধাপ ৫: ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন
এই ধাপে একটি QR Code দেখতে পাবেন। এখন অন্য একটি মোবাইলে গুগল প্লে স্টোর ওপেন করুন। NID Wallet লিখে সার্চ করে অ্যাপটি ইনস্টল করুন। এরপর, অ্যাপটি ওপেন করে নিন।
অ্যাপ ওপেন করার পর আগের ডিভাইসে থাকা QR Code টি স্ক্যান করুন। স্ক্যান করা হলে আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করতে বলবে। স্ক্রিনে দেখানো পদ্ধতিতে ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
ধাপ ৬: ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড সেট করুন
ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে আগের ডিভাইসে নতুন পেজে নিয়ে যাবে। আপনার একাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সেট করতে বলবে। একটি ইউনিক ইউজারনেম এবং গোপন পাসওয়ার্ড সেট করবেন।
ধাপ ৭: এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করুন
আপনার প্রোফাইলে নিয়ে আসা হবে। প্রোফাইল থেকে নিচের ছবির মতো ডাউনলোড অপশন পাবেন। ডাউনলোড লেখার উপর ক্লিক করলে ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন কপি PDF আকারে ডাউনলোড হবে।
এখন আপনি এই পিডিএফ ফাইলটি ওপেন করলে আপনার এনআইডি কার্ড দেখতে পারবেন। এটি লেমিনেটিং করে যেকোনো প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন। পূর্বে এমন অনলাইন কপি দেয়া হতো সবাইকে। যা এখন ঘরে বসে ডাউনলোড করা যাচ্ছে।
পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
NIDW ওয়েবসাইট ভিজিট করে এনআইডি একাউন্ট রেজিস্টার করার পর প্রোফাইল থেকে পুরাতন আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। নতুন ভোটার আইডি কার্ড বা পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড, ডাউনলোড করার পদ্ধতি একই।
তবে, আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সময় কোনো ভুল তথ্য দেয়া যাবেনা। এতে করে আপনার এনআইডি একাউন্টটি লক হয়ে যাবে। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে আনলক করে আনতে হবে।
এছাড়া, যে ব্যক্তির এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন, তার ফেস স্ক্যান করতে হবে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে দুইটি স্মার্টফোন বা একটি কম্পিউটার এবং একটি স্মার্টফোন প্রয়োজন হবে।
হারানো ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
ভোটার আইডি কার্ড বা স্মার্ট আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে থানায় গিয়ে একটি জিডি করতে হবে। এরপর, জিডির কপি নিয়ে এনআইডি একাউন্টে লগইন করতে হবে বা এনআইডি একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে।
অতঃপর, ভোটার আইডি কার্ড রি-ইস্যুর আবেদন করতে হবে। রি-ইস্যুর আবেদন করার সময় আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে এটি উল্লেখ করতে হবে এবং জিডির কপি যুক্ত করতে হবে। এছাড়া, আইডি কার্ড রি-ইস্যু আবেদন ফি জমা দিতে হবে।
তাহলে, রি-ইস্যু আবেদন অনুমোদন হলে আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করতে পারবেন।
তবে, নতুন ভোটারদের ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে যদি এনআইডি একাউন্টে লগইন করতে পারেন, তাহলে প্রোফাইল থেকেই আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এজন্য, আলাদা করে রি-ইস্যু করার প্রয়োজন পড়েনা। পুরাতন ভোটার হলে এবং আইডি কার্ডের অনলাইন কপি পেয়ে থাকলে রি-ইস্যু আবেদন করে আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হবে।
বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর
এনআইডি ফরম নাম্বার ভুল বললে করনীয় কী?
শুধু এনআইডি ফরম নাম্বার লিখে সাবমিট করলে ভুল বলবে। তাই, ফরম নাম্বার লেখার পূর্বে NIDFN লিখতে হবে।
অপ্রত্যাশিত সমস্যার জন্য দুঃখিত, এই সমস্যার সমাধান কী?
সাধারণত এনআইডি সার্ভারে সমস্যা হলে এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। তবে, আপনার দেয়া তথ্য সঠিক আছে কিনা যাচাই করে দেখুন। ঠিক থাকার পরেও এমন দেখা দিলে অপেক্ষা করতে হবে কয়েকদিন।
এনআইডি একাউন্ট লক হয়ে গেলে করণীয় কী?
তিনবার ঠিকানা ভুল দিলে বা এনআইডি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার সময় ভুল তথ্য দিলে এনআইডি একাউন্ট লক হয়ে যায়। লক হলে নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
এনআইডি সার্ভার কপি কিভাবে পাওয়া যাবে?
এনআইডি কার্ডের সার্ভার কপি পেতে এই পোস্টে উল্লেখ করে দেয়া পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার উপায় কী?
স্মার্ট আইডি কার্ড ডাউনলোড করা যায়না। স্মার্ট কার্ড পেতে চাইলে অপেক্ষা করতে হবে। আপনার এলাকায় স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হলে সংগ্রহ করতে পারবেন। স্মার্ট কার্ড স্ট্যাটাস চেক করার মাধ্যমে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
উপসংহার
এনআইডি নাম্বার অথবা টোকেন নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পদ্ধতি নিয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ভোটার আইডি কার্ড চেক করার পর চাইলে আপনার আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন সহজেই।
যেকোনো প্রশ্ন করতে বা মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। এছাড়াও, আমাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনার সমস্যাটি বিস্তারিত জানাতে পারেন।