নতুন ভোটার হতে চাচ্ছেন কিন্তু ভোটার হতে কি কি লাগে এবং ভোটার হতে কত টাকা লাগে জানেন না? তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

ভোটার রেজিস্ট্রেশন করতে ইচ্ছুক কিন্তু, ভোটার হওয়ার জন্য কত টাকা লাগে এবং কী কী কাগজপত্র লাগে তা অনেকেই জানেন না। একারণে, নতুন ভোটার আবেদন করার সময় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

নতুন ভোটার নিবন্ধন করার সময় কী কী লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকছে এই পোস্টে। চলুন, বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে

নতুন ভোটার হতে চাইলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়ে থাকে। ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করার সময় এসব তথ্য দিতে হয়। এছাড়াও, বেশ কিছু ডকুমেন্টের ফটোকপি জমা দিতে হয়। ভোটার নিবন্ধন করতে যা যা লাগে –

  • জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • পিতা-মাতার এনআইডির তথ্য
  • স্বামী/স্ত্রীর এনআইডির তথ্য
  • হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ
  • ইউটিলিটি বিলের কপি
  • নাগরিক সনদপত্র
  • রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ পত্র

নতুন ভোটার নিবন্ধন আবেদন করার সময় একটি ফরম পূরণ করতে হয়। অনলাইনে ভোটার আবেদন করুন অথবা সরাসরি, ফরম পূরণ করতেই হবে।

ফরম পূরণ করার সময় ব্যক্তিগত সকল তথ্য দিতে হবে। এছাড়া, উপরোক্ত তালিকায় যেসব ডকুমেন্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো ফটোকপি করে জমা দিতে হবে।

→ জন্ম নিবন্ধন সনদ

১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার এবং একটি ফটোকপি জমা দিতে হবে ভোটার নিবন্ধন করার সময়। অনলাইনে ভোটার আবেদন করলে, জন্ম সনদের একটি স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে। জন্ম সনদটি ১৭ ডিজিট হতে হবে এবং অনলাইন করা থাকতে হবে।

→ পিতা-মাতার এনআইডির তথ্য

নতুন ভোটার নিবন্ধন এর জন্য আবেদন করার সময় পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের তথ্য দিতে হবে। পিতা-মাতার নাম, এনআইডি কার্ডের নাম্বার এবং ফটোকপি জমা দিতে হবে। অনলাইনে আবেদন করলে স্ক্যান কপি জমা দিতে হবে।

→ স্বামী/স্ত্রীর এনআইডির তথ্য

বিবাহিত হতে স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ডের তথ্য দিতে হবে। অর্থাৎ, স্বামী/স্ত্রীর নাম, এনআইডি কার্ডের নাম্বার ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে। অবিবাহিত হলে এসব তথ্য প্রয়োজন হবেনা।

→ হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ

বাসা-বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ জমা দিতে হবে। যদি ট্যাক্স পরিশোধ করা থাকে, তবে সেটির রশিদ জমা দিলেই হবে। যদি অপরিশোধিত থাকে, তবে ট্যাক্স পরিশোধ করার মাধ্যমে রশিদ সংগ্রহ করতে হবে এবং জমা দিতে হবে। অনলাইনে আবেদন করলে এটির একটি স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।

→ ইউটিলিটি বিলের কপি

বাসা/বাড়ির ইউটিলিটি বিলের একটি কপি জমা দিতে হবে ভোটার নিবন্ধন করার সময়। বিদ্যুৎ বিল/গ্যাস বিল/ইন্টারনেট বিল বা যেকোনো ইউটিলিটি বিলের একটি কপি জমা দিতে হবে। অ্যাড্রেস ভেরিফাই করার জন্য এই ডকুমেন্ট জমা নেয়া হয়ে থাকে।

→ নাগরিক সনদপত্র

আপনার সিটি কর্পোরেশন অথবা ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করে একটি নাগরিক সনদপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। মেয়র অথবা চেয়ারম্যানের থেকে স্বাক্ষর নেয়ার পর একটি নাগরিক সনদ সংগ্রহ করতে পারবেন। এটি দিয়ে ভোটার আবেদন করতে হবে।

→ রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট

এনআইডি কার্ডে রক্তের গ্রুপ উল্লেখ করা থাকে। আপনার রক্তের গ্রুপ কী তা প্রমাণ করার জন্য রক্তের গ্রুপ টেস্টের একটি রিপোর্ট জমা দিতে হবে। যেকোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টার অথবা হাসপাতাল থেকে ব্লাড টেস্ট করে রিপোর্ট সংগ্রহ করে সেটি জমা দিতে পারবেন।

→ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ পত্র

যেকোনো বোর্ড পরীক্ষা দিয়ে থাকলে সেটির সনদপত্রের একটি ফটোকপি জমা দিতে হবে। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে থাকলে সেগুলোর সনদপত্রের ফটোকপি করে জমা দিতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার সময় স্ক্যান কপি আপলোড করে সাবমিট করতে হবে।

নতুন ভোটার হতে কত টাকা লাগে

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য টাকা প্রয়োজন হয়না। তবে, ভোটার নিবন্ধন করার সময় যেসব ডকুমেন্ট চাওয়া হবে, সেসব ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা এবং ফটোকপি করার জন্য কিছু টাকা খরচ হতে পারে।

এছাড়া, আপনার বাসা-বাড়ি বা জমির ট্যাক্সের কাগজপত্র চাওয়া হলে সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে। যদি ট্যাক্স অপরিশোধিত থাকে, তাহলে পরিশোধ করতে হবে।

এছাড়া, ভোটার নিবন্ধন করার জন্য কোনো টাকা প্রয়োজন হয়না। ঘরে বসে অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন করতে পারবেন। অথবা, আপনার এলাকায় ভোটার নিবন্ধন শুরু হলে তখন ভোটার নিবন্ধন করতে পারবেন।

নতুন ভোটার হতে কতদিন সময় লাগে

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন সম্পন্ন করার ৩ মাস পর্যন্ত সময় লেগে থাকে ভোটার হওয়ার জন্য। সাধারণত ভোটার নিবন্ধন করার এক মাসের মাঝেই এসএমএস এর মাধ্যমে এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানিয়ে দেয়া হয়।

তবে, কিছু ক্ষেত্রে ৩ মাস পর্যন্ত সময় লেগে থাকে। এই সময়ের মাঝে এসএমএস এর মাধ্যমে যারা ভোটার নিবন্ধন করেছেন, তাদেরকে এনআইডি কার্ডের নাম্বার জানিয়ে দেয়া হয়।

তবে, যারা এসএমএস পাননি, তারা ভোটার স্লিপে থাকা নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন সহজেই।

বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কত টাকা লাগে?

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে কোনো টাকা লাগেনা। ট্যাক্স অপরিশোধিত থাকলে তা পরিশোধ করে রশিদ নিতে হয়। এছাড়া, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ফটোকপি করতে হয়। এসব খরচ ছাড়া আর কোনো টাকা লাগেনা।

ভোটার আইডি কার্ড করতে কত বছর লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করার জন্য ন্যুনতম ১৮ বছর বয়স হতে হয়। তবে, এখন ১৭ বছর বয়সেও ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য ভোটার আবেদন করা যাচ্ছে।

উপসংহার

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কি কি লাগে, ভোটার হতে কত টাকা লাগে এবং ভোটার হতে কতদিন সময় লাগে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে এই পোস্টে। ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ রইলো।

সম্পর্কিত তথ্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *